শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন

নোটিশঃ
দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় সাংবাদিক  নিয়োগসহ পরিচয় পত্র নবায়ণ চলছে।

বিচারবহির্ভূত হত্যা-গুমসহ নানা অভিযোগ সংসদে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুমসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে জাতীয় সংসদে।

সোমবার (১৩ জুন) ২০২১-২২ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনাকালে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা এই অভিযোগ তুলে ধরেন।

তারা বলেন, এই সরকারের আমলে পুলিশ পরিণত হয়েছে দলীয় বাহিনীতে। তাদের বিরুদ্ধে বিচারবর্হিভূত হত্যা, গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ বাহিনীর কনস্টেবল থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নানা অপরাধে জড়িত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। এর কারণ যেসব পুলিশ অপরাধ করছে তার শাস্তি হচ্ছে না।

এসব বক্তব্যের জবাবে সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, পুলিশে কেউ খারাপ না এটা হলফ করে বলছি না। কিন্তু দেখতে হবে, যারা অন্যায় করছে তাদের সরকার বরদাস্ত করছে কি না। যারা অন্যায় করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু পুলিশ বাহিনীতে দুর্নীতিবাজদের অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।

সংসদে গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, পুলিশ বাহিনীর কনস্টেবল থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নানা অপরাধে জড়িত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। ফলে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে গোটা পুলিশ বাহিনী।

বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, এই সরকারের আমলে পুলিশ রাষ্ট্রীয় বাহিনী নয়, পরিণত হয়েছে দলীয় বাহিনীতে। পুলিশের কাছে নতুন সমস্যায় পড়তে হয় কিনা এই আশঙ্কায় মহাবিপদে পড়লেও মানুষ তাদের কাছে যেতে চায় না। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিচারবহির্ভূত গুম-হত্যা তো রয়েছেই।

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, আজকে পুলিশের কেউ অন্যায় করলে মানবাধিকার কমিশন নিশ্চুপ থাকে। কোনো পুলিশ অন্যায় করলে সব পুলিশ একত্রিত হয়ে তাকে সাপোর্ট করে। ফলে অসহায় হয়ে যায় জুডিসিয়ারি। জনগণের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, কিন্তু তাদের যাওয়ার জায়গা নেই। পুলিশকে বুঝতে হবে। পি ফর পেলাইট। আমাদের পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে জনগণকে তাদের চাকর মনে করে। পুলিশের দায়বদ্ধতা প্রয়োজন। পুলিশ মনে করে অস্ত্র তার হাতে। তার কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। তারা সীমাহীন ক্ষমতার মালিক।

এসময় তিনি সংসদে মানবাধিকারবিষয়ক সর্বদলীয় স্পেশাল কমিটি করার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, এই মানবাধিকারবিষয়ক কমিটি জনগণের যে কোনো অভিযোগ এলে তা তদন্ত করবে।

বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, পুলিশ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলার বাদী ও সাক্ষী হয়ে প্রমাণ করে যে দেশের বিচার ব্যবস্থার অবস্থা কতটা নাজুক। সরকারি দল চায় পুলিশ তাদের কথা মতো চলবে। এই ধারা থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিতে পারবো না।

নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বিলুপ্ত করে দেন। এটাকে ন্যস্ত করেন পুলিশ বাহিনীর হাতে। কী প্রয়োজন, খামাখা। পুলিশের আইজিপিকে প্রধান করে দেন। তাদের অধীনে নির্বাচন দেন। দরকার নেই। আইন করেন সংসদে। সেইভাবে নির্বাচন হবে।

এসব বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, পুলিশ বাহিনীকে নিয়ে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, এতে উনারাই প্রমাণ করেছেন যে এটা নেহায়েত রাজনৈতিক বক্তব্য। পুলিশের কাজ দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন। বর্তমান সরকারের অধীনে পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। আপনারা জানেন, অনিয়মের কারণে অনেক পুলিশ কর্মকর্তা চাকরি হারাচ্ছে। বাড়াবাড়ির কারণে অনেকে বিচারের মুখোমুখি হয়েছে। পেয়েছে শাস্তি।

হাজার হাজার পুলিশ নিয়োগ হচ্ছে যার একটিতেও কোনো ধরনের ঘুস লেনদেনের অভিযোগ নেই বলে দাবি করেন মন্ত্রী।

নিউজটি শেয়ার করুন

All rights reserved © meghnapost.com